চলতি মাসে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারকারীদের জন্য বিশাল বড় একটি সুখবর। কয়েক মাস ধরে লাগাতার এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছিল অবশেষে গ্রাহকদের মনে সুখবর নিয়ে এলো এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের তরফ থেকে। এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিরাট বড় দামের পতন ঘটল। আপনি বা আপনার পরিবার যদি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই বিস্তারিতভাবে জেনে নিতে পারেন।
চলতি মাসে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারে মূল্য হ্রাস ঘটায় পশ্চিমবঙ্গের গৃহস্থ থেকে শুরু করে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকদের মুখে হাসি ব্যাপক ফুটেছে। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে এর ফলে ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলোতেও মূল্য রাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ফলে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দামেও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।
এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারে যে দামের প্রথম ঘটেছে সেখানে দেখা গিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যবহারের ১৯ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের দাম কলকাতায় ৩২ টাকা কমে এখন ১,৮৭৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে গৃহস্থালি ব্যবহারের ১৪.২ কেজি সিলিন্ডারের দাম হাজারের নিচে নেমে এসেছে যেখানে কলকাতায় ৮২৯ টাকা, দিল্লিতে ৮০৩ টাকা এবং মুম্বাইয়ে ৮০২.৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
দাম কমার পেছনের কারণ
এই দাম কমার পিছনে রয়েছে বহির বিশ্বে আন্তর্জাতিক কারণ। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৪% শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ফলে এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে এলপিজি গ্যাসের দামে। আন্তর্জাতিক তেল বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বিশ্ব বাজারে অর্থনৈতিক মন্দা এবং প্রচুর পরিমাণে তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির দরুন এই তেলের দামের মূল্যহ্রাস ঘটেছে। এই মূল্য রাশের ফলে গৃহস্থ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রেস্তোরা মালিকেরা বেজায় খুশি। তেলের দাম কমার ফলে যেমন একদিকে উপকৃত হয়েছেন গৃহিণীরা তেমনি বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁর মালিকসহ, ফুড কোম্পানিগুলো উপকৃত হয়েছেন।।
উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধা
গ্যাসের দাম কমার ফলে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে যারা গ্যাস পেয়ে যাচ্ছিলেন তারাও ব্যাপকভাবে সুবিধাভোগী হবেন। উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে যারা গ্যাস হয়ে যাচ্ছেন তারা ১৪.২ কেজি সিলিন্ডার পেয়ে যাবেন মাত্র ৫২৯ টাকায়। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি সিলিন্ডারে ৩০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। তবে যারা উজ্জ্বলা যোজনা আর সুবিধা পান না তারা সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই মূল্যহ্রাস একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করতে পারে।
ভবিষ্যত সম্ভাবনা
তেল বিশেষজ্ঞ ড. অমিতাভ ঘোষের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যদি আরও কমে তবে জুন মাসের আগে আরেক দফা দাম কমানো হতে পারে। তবে যাই হোক এই দাম কমার ফলে সকলেই উপকৃত হয়েছে কিন্তু এর ফলে সরকারের কাছে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে ভর্তুকি ব্যবস্থা বজায় রাখার ব্যাপারটা। তবে এই মূল্য কমে যাওয়াই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রসার ঘটাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
গ্যাস সিলিন্ডারের এই মূল্যহ্রাস পশ্চিমবঙ্গের ১.২ কোটি গ্যাস ব্যবহারকারীর জন্য স্বস্তি খবর বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী কয়েক মাসে গৃহস্থালি সিলিন্ডারের দামেও কিছু ছাড় দেওয়া হতে পারে।