পড়ুয়াদের জন্য সরকারের নতুন প্রকল্প, আবেদন করুন আর পেয়ে যান ৮০০ টাকা। WB Medhasree Scheme 2023

 

পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী প্রতিটি পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের জন্য এক বিরাট সুসংবাদের ঘোষণা করা হলো রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এবার থেকে আবেদন করুন রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে এবং ঘরে বসেই প্রতি মাসে ইনকাম করুন ভালো টাকা। আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষের প্রতি অত্যন্ত সহৃদয় এবং দয়াবান। এর পরিচয় আমরা প্রত্যেকবার পেয়েছি তার চালু করা একের পর এক জনমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে। 
             ২০১১ সালে তিনি প্রথমবার রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছিলেন। তখন থেকে শুরু করে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট তিনবার পরপর তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এবং এই তিনবারই নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি একের পর এক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সূচনা করেছেন। যেগুলির মাধ্যমে উপকার পেয়েছে রাজ্যের সকল মানুষ। এইরকম প্রকল্পগুলির মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল স্বাস্থ্য সাথী, সবুজ সাথী, ঐক্যশ্রী, রূপশ্রী, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড ও আরো অনেক। আজ আমরা এখানে যে প্রকল্পের বিষয় আলোচনা করব সেটিও মাননীয়ার চালু করা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম। এর নাম হলো মেধাশ্রী প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের সহৃদয় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বিভিন্ন অনগ্ৰসর পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের প্রতি বছর একটি ভালো টাকা ভাতা প্রদান করবেন বলে জানা গেছে। রাজ্যের প্রতিটি ছেলে-মেয়ে যারা বর্তমানে স্কুল, কলেজ বা অন্যান্য কোন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন অথবা কোন ট্রেনিংয়ের সঙ্গে যুক্ত আছেন তাদের পড়াশোনার সমস্ত ব্যবহার বহন করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই বিশেষ প্রকল্পের ব্যবস্থা। তবে এই প্রকল্পের সুবিধা কিন্তু সবাই পাওয়ার যোগ্য নয়।‌‌ কেবলমাত্র অনগ্ৰসর বা ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত প্রার্থীরা এখানে আবেদন করতে পারবেন।
       তবে এই প্রকল্পের ব্যাপারে কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আগে কোনরকম ঘোষণা করেননি। অর্থাৎ এই প্রকল্প একেবারে অভিনব। এই বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে এক প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্প সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন য সমস্ত অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত ছেলেমেয়েরা নিজেদের পড়াশোনার খরচ বহন করতে অক্ষম তাদের ভবিষ্যৎকে সুনিশ্চিত করতে এবং তাদেরকে নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করাই হলো এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রী নয়া উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন আরো অনেকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে তার এইরূপ কর্মসূচির আরম্ভের পেছনে একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। সম্প্রতি আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সকল অনগ্রসর বা ওবিসি শ্রেণীভুক্ত পড়ুয়ারা যারা পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বর্তমানে পড়াশুনা করছে তাদেরকে সমস্ত রকম স্কলারশিপ বা ভাতা প্রদান করা বন্ধ করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন যে তফসিলি জাতি ও উপজাতিরা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে চলেছে। কিন্তু এই অনগ্রসর শ্রেণীভূক্ত ছেলেমেয়েরা শুধুমাত্র সরকারি চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সে ৩ বছরের ছার ছাড়া আরো কিছুই বিশেষ সুবিধা লাভ করছে না। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য হল আসলে একটাই যে যদি কেন্দ্রীয় সরকার চায় সমস্ত নিম্ন শ্রেণীর সংরক্ষণ বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্র থেকে তুলে দিতে তাহলে তিনি সেটা করতেই পারেন। কিন্তু যেখানে অন্য সকল পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের সাহায্য করা হচ্ছে, সেখানে শুধুমাত্র ওবিসি সম্প্রদায় ভুক্ত ছেলেমেয়েরা কেন বঞ্চিত হবে ?  তাই তাদের এই স্বার্থের কথা মাথায় রাখি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নতুন প্রকল্প সূচনা করেছেন। তিনি আরো ঘোষণা করেছেন যে এই প্রকল্পে বিভিন্ন পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা যারা ওবিসি শ্রেণীভুক্ত তাদেরকে তিনি প্রতি বছরে ৮০০ টাকা করে স্কলারশিপ দিয়ে থাকবেন। তিনি মনে করেন যে এই অর্থ তাদেরকে তাদের শিক্ষাগত ক্ষেত্রে অনেক অংশে সাহায্য করবে।
      তবে প্রতিটি মানুষেরই জানা যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবলমাত্র রাজ্যের অনগ্ৰসর শ্রেনীর ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কাজেই সাহায্য করেন না। এর আগে তিনি এমন অনেক প্রকল্প আয়োজন করেছেন যার মাধ্যমে এখনো পর্যন্ত রাজ্যের কোটি কোটি শিক্ষার্থী চরমভাবে উপকৃত হয়ে চলেছে। যেমন ২০২১ সালে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরই তিনি চালু করেন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। এছাড়া অনেক আগেই তিনি দশম শ্রেণী উত্তীর্ণ মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য কন্যাশ্রী, রাজ্যের সকল পড়ুয়াদের জন্য ঐক্যশ্রী ইত্যাদি স্কলারশিপ গুলি চালু করেছেন। যার দ্বারা রাজ্যের বিপুল সংখ্যক পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা কোনোরকম অর্থের চিন্তা না করেই নিজেদের পড়াশোনা যতদূর চায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এদিক দিয়ে অন্তত মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সকল শিক্ষার্থীদের মন যে জয় করে নিয়েছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
       তবে মুখ্যমন্ত্রী যত ভালই কর্মসূচি পালন করুন না কেন, যত ভালো উদ্যোগই তিনি রাজ্যের মানুষদের কথা চিন্তা করে নিন না কেন, রাজ্যের মানুষদের একাংশ এবং বিরোধী পক্ষের সদস্যরা কিন্তু তার নিন্দা করতে কোনদিন ছাড়েনি আর ছাড়বেও না। কারণ নিন্দুকদের কাজই তো হলো নিন্দা করা। যদিও বা মুখ্যমন্ত্রীর দলেরই কিছু দুর্নীতিপূর্ণ সদস্যদের জন্য তৃণমূল সরকারের মুখে একেবারে চুনকালি পড়েছে। যেমন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অন্যান্য সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও দুর্নীতি, এছাড়া মাত্র কয়েকদিন আগে বাংলা আবাস যোজনাতেও কিছু গন্ডগোল ধরা পড়েছিল। যার জন্য রাজ্যের সকল মানুষ দায়ী করে চলেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্যের মানুষদের কথা চিন্তা করে তিনি যে ভালো কাজগুলি অতীতে করেছেন সেগুলি সব ভুলে গিয়ে তারা এখন মুখ্যমন্ত্রীর দলের কিছু নোংরা সদস্যদের কাজের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর ওপর। কিন্তু তাতেও মুখ্যমন্ত্রীর কিছু পাল্টে যাবে না। কারণ এই কথা এখন বলাই বাহুল্য যে পশ্চিমবঙ্গের ওপর কিন্তু তৃণমূল সরকারেরই আধিপত্য বেশি। 
      তবে যাই হোক, এ কথা নিঃসন্দেহে অবশ্যই বলে যেতে পারে যে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা নতুন এই প্রকল্প রাজ্যের আর্থিকভাবে অনগ্রসর পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের বেশ উপকারে আসবে। তাদেরকে এখন আর কোনরকম অর্থের চিন্তা করতে হবে না। আর তাদেরকে অল্প বয়সে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কর্মসংস্থানের জন্য প্রচেষ্টা করতে হবে না। কারণ তাদের মাথার উপর সর্বদা আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর মহানুভবতার হাত রয়েছে। 

আরও খবর পড়ুন: CLICK HERE

Join Telegram Channel : CLICK HERE

Leave a comment