নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে সকল দেশবাসীর জন্য যেন একের পর এক চমক এসেই চলেছে। এই নতুন বছরে বিভিন্ন সরকারের পক্ষ থেকে ছোট বড় নানা ধরনের চাকরিতে প্রচুর পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার তার অধীনস্থ কর্মীদের বেতন বৃদ্ধিও ঘোষণা করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন নতুন কর্মমুখী প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করা হয়েছে। নতুন কিছু প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে এই বছরটি হল যেন সমস্ত দেশবাসীর কাছে ইচ্ছা পূরণের এক বছর। তবে এখানেই শেষ নয়, দেশবাসীর মনে দ্বিগুণ আনন্দের সঞ্চার করতে এবার এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ডাক বিভাগও। এই বিভাগের পক্ষ থেকে সম্প্রতি এমন এক নতুন স্কিমের ঘোষণা করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে স্কিমের মাধ্যমে পোস্ট অফিসে মানুষ তাদের অর্থ সঞ্চয় করলেই একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তা সুদে আসলে মিলিয়ে এমন হারে বৃদ্ধি পাবে যা সকলের আশার বাইরে। তাহলে চলুন আর অযথা কথা না বাড়িয়ে এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।
ভারতীয় ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে চালু করা কিষান বিকাশ যোজনার সঙ্গে আপনারা সকলেই দীর্ঘকাল ধরে সুপরিচিত। সুদূর অতীত কাল থেকেই দেশের প্রচুর মানুষ এই স্কিমের মাধ্যমে অর্থ সঞ্চয় করে বিবিধ সুযোগ-সুবিধা লাভ করে এসেছেন। কিন্তু আজ পোস্ট অফিসের এই পুরনো স্কিমেই নতুন কিছু বিরাট পরিবর্তন এনেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। যে সকল ব্যক্তি পোস্ট অফিসে তাদের অর্থ সঞ্চয় করে রাখেন তারা যদি এই নতুন স্কিমের মাধ্যমে নিজেদের অর্থ জমা করেন তাহলে তা আগামী বেশ কয়েক মাসের মধ্যেই পরিমাণে দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসবে তাদের কাছে।
সম্প্রতি পোস্ট অফিসে তরফ থেকে করা এক ঘোষণায় বলা হয়েছে যে আগে কিষাণ বিকাশ পত্রে টাকা জমা করলে মানুষ যে সুদের হারে টাকা ফেরত পেত, এখানে সুদের হার তার চেয়েও ০.২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন এই কিষান বিকাশ পত্রে সুবিধাভোগীরা আগের চেয়ে দ্বিগুণ সুবিধা লাভ করতে চলেছেন। এছাড়া আরো বলা হয়েছে যে নতুন এই স্কিমে আবেদনকারীদের টাকা আগামী মাত্র ১২০ মাসের মধ্যে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। আর এই পদ্ধতিটি হলো সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত এবং ঝুঁকিহীন। তাই পোস্ট অফিসের এই নতুন স্কিমে আবেদনকারীদের সব দিক থেকে সোনায় সোহাগা। পোস্ট অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে আগের চালু করা কিষান বিকাশ পত্র যোজনায় সকল আবেদনকারীরা যারা এর আওতায় নিজেদের অর্থ সঞ্চয় করে রাখতেন তাদের টাকা আগামী ১২৩ মাসের মধ্যে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেতো। কিন্তু নতুন এই নিয়মে তাদের সেই টাকা আগের চেয়ে তিন মাস কমিয়ে অর্থাৎ ১২০ মাসের মধ্যে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হবে। এছাড়াও পূর্বেই বলা হয়েছে যে এখানে সুদের হার আরো ০.২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সুতরাং আগের কিষাণ বিকাশ পত্রে যারা টাকা জমা করতেন তারা ৭ শতাংশ হারে সুদ লাভ করে থাকতেন। কিন্তু নতুন এই নিয়মে তারা আরও ০.২০ শতাংশ বেশি অর্থাৎ ৭.২০ শতাংশ সুদে টাকা বেশি পাবেন।
এবারে কথা বলা যাক এখানে আবেদন পদ্ধতি এবং অন্যান্য খুঁটিনাটি আরও বিষয় নিয়ে। প্রথমত এখানে আবেদন করতে গেলে বিশেষ কোন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে না। শুধুমাত্র আপনার কাছের যে পোস্ট অফিস আছে সেখানে গিয়ে বলতে হবে যে আপনি এই নতুন স্কিমের মাধ্যমে অর্থ সঞ্চয় করতে চান। তারপর পোস্ট অফিসের পক্ষ থেকে আপনাকে একটি ফর্ম দেওয়া হবে। সেই আবেদন পত্রে সব প্রয়োজনীয় তথ্য সমূহ ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। আর তারপর যে পরিমাণ টাকা আপনি জমা করতে ইচ্ছুক সেই টাকা পোস্ট অফিসে নগদ, চেক, কার্ড বা অন্যান্য নির্দিষ্ট উপায়ে জমা করতে হবে। তবে এই আবেদন করার সময়ে প্রার্থীদের অবশ্যই তার আবেদনের সঙ্গে যে কোন একটি ফটো আইডি প্রুফের জেরক্স প্রদান করতে হবে পোস্ট অফিসের কাছে। তাহলেই আবেদন প্রক্রিয়া শেষ। এরপর নির্দিষ্ট সময়ের পেরোলে টাকা প্রত্যাহার করলেই আবেদনকারীরা এর সুবিধা লক্ষ্য করতে পারবেন।
তবে কিষাণ বিকাশ পত্রের এই যে নতুন নিয়ম এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হল যে এখানে আবেদনকারীরা যে পরিমাণ চান সেই পরিমাণ অর্থই জমা করতে পারবেন অর্থাৎ এখানে আবেদন কারীদের কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চিত রাখতে হবে না। শুধুমাত্র অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে প্রার্থীদের ১০০০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করতে হবে। তারপর ১০০ টাকা করে চাইলেও তারা সেখানে বিনিয়োগ করতে পারেন। এরপরই নির্দিষ্ট সময় পার হলে তারা নিজেদের সঞ্চিত অর্থ সুদ আসল সমেত প্রত্যাহার করে নিতে পারবেন।
এর পরে কথা বলা যাক বয়স সীমা নিয়ে। পোস্ট অফিসের এই স্কিমে আবেদন করার জন্য প্রার্থীদের কোন সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ বয়সসীমা রাখা হয়নি। ১০ বছরের কম বয়সী বাচ্চারাও এখানে আবেদন করতে পারবে। শুধু এক্ষেত্রে তার অ্যাকাউন্টটি তার কোন এক অভিভাবকের নামে প্রাথমিকভাবে রাখতে হবে। এবং যেই সেই আবেদনকারী ১০ বছর পার করবে তখনই তার অ্যাকাউন্টটি তার নিজের নামে ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে।
তাই সকল ব্যক্তিকে অনুরোধ করা হচ্ছে যে পোস্ট অফিসের পক্ষ থেকে চালু করা এই নতুন স্কিমের মাধ্যমে তারা যদি নিজেদের সঞ্চিত অর্থ দ্বিগুণ করতে আগ্ৰহী থাকেন তাহলে আর দেরি না করে শীঘ্রই আপনার নিকটস্থ পোস্ট অফিসে যান এবং এই সুবিধা পাওয়ার জন্য নিজের নাম নথিভুক্ত করূন। কারণ এরকম সুবর্ণ সুযোগ কিন্তু বারবার আসে না। তাই কোনোভাবেই এই সুযোগকে হাতছাড়া করবেন না।
আরও খবর পড়ুন: CLICK HERE
Join Telegram Channel : CLICK HERE