নতুন বছরের শুরুতে প্রত্যেক রাজ্যবাসী আবেদন করলেই পাবেন টাকা ও নতুন নতুন সুবিধা | WB Govt Scheme 2023

নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল যেন পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত রাজ্যবাসীর কাছে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মত। নতুন বছরের শুরুতে এমনিতেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রচুর ছোট বড় নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছে যেগুলির মাধ্যমে সুবিধা পেতে চলেছেন রাজ্যের কোটি কোটি মানুষ। আজ এমনই এক আকর্ষণীয় প্রকল্পের খবর নিয়ে চলে এসেছি আমরা আপনাদের সামনে যার মাধ্যমে বোঝা যায় যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার রাজ্য বাসীদের কতটা আপন ভাবেন এবং তাদের প্রতি কতটা নজর দেন। 

           ২০১১ সালে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের জনমুখী প্রকল্প চালু করে চলেছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প মিলিয়ে তার চালু করা প্রকল্পগুলির সংখ্যা হল ৭০ টিরও বেশি। এই সকল প্রকল্পগুলির মাধ্যমে বারবার উপকৃত হয়েছে রাজ্যের কোটি কোটি মানুষ। এই সকল প্রকল্প গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী, খাদ্য সাথী, সবুজ সাথী, লক্ষীর ভান্ডার ও আরো অনেক। 

         কিন্তু এখনো পর্যন্ত রাজ্যের এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা উপযুক্ত হওয়া সত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা সকল প্রকল্পগুলির সঠিক সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না। অথচ অন্যদিকে যারা উপযুক্ত নয় বা যাদের প্রকল্পগুলির আওতায় থাকার দরকার নেই তারা দিব্যি সুবিধা ভোগ করে চলেছে। কদিন আগে বাংলা আবাস যোজনার মাধ্যমে এই সকল দুর্নীতির স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। যেখানে আবেদনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এমন বহু মানুষকে যাদের এই যোজনার মাধ্যমে সুবিধা লাভ করার কোন যোগ্যতা নেই। সেই কারণেই এবারে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা হল সমস্ত সরকারি প্রকল্পগুলির সুযোগ সুবিধা রাজ্যের প্রতিটি মানুষ অর্থাৎ যারা এর আওতায় থাকার উপযুক্ত তারা সঠিকভাবে সে সুযোগ সুবিধা লাভ করেছেন নাকি তা খতিয়ে দেখবেন। সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য তিনি প্রায় তিন লক্ষেরও বেশি কর্মী নিয়োগ করবেন। এই সকল কর্মীরা রাজ্যের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদেরকে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা সকল প্রকল্পগুলির সম্পর্কে ধারণা দেবে। সেই সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করবেন যে তারা যেন সকলে সেই প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা ন্যায্য ভাবে উপভোগ করেন।

         উপরোক্ত এই পদক্ষেপের নাম আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় নির্ধারিত হয়েছে। তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘দিদির সুরক্ষার কবচ।’ এবং সেই তিন লক্ষেরও বেশি কর্মীরা যারা এখানে সঙ্গে নিযুক্ত থাকবেন তাদেরকে তিনি উপাধি দিয়েছেন ‘দিদির দূত’ হিসেবে। 

       খুব শিগগিরই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন আয়োজিত হতে চলেছে। কাজেই রাজ্যের মানুষদের মনে একটা প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে আসতে পারে যে প্রতি বছর ভোটের আগেই কেন সরকার তাদের ওপর এত দয়া করেন? কই অন্য সময় তো তাদের স্বার্থের খেয়াল কেউ রাখে না। প্রশ্নটা খুবই স্বাভাবিক। আর এর উত্তরটাও খুবই স্পষ্ট। ঠিক কেমন ভাবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর নির্দেশ দিয়েছিলেন সারা রাজ্য জুড়ে দুয়ারে সরকার প্রকল্প শুরু করার জন্য, যাতে এর মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তার জনগণের প্রতি সহৃদয়তা এবং ভালোবাসা প্রকাশ পায়। ঠিক তেমনভাবেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও এই রূপ জনকল্যাণমূলক একটি পদক্ষেপ তৃণমূল সরকারের প্রতি রাজ্যবাসীদের মনোভাব যে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দেবে তার বলার অপেক্ষা রাখে না।

       এমনিতেই রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরোধী পক্ষের সদস্যরা দিদির চালু করা বিভিন্ন প্রকল্পের কটাক্ষ করে চলেছেন। সেই সঙ্গে চাকরিতে নিয়োগ থেকে শুরু করে সরকারি প্রকল্পগুলিতে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি এই সকল বিরোধীপক্ষের সদস্যদের যেন আরও বেশি জোর দিয়ে দিয়েছে। কাজেই তারা এবারে সুযোগ পেয়ে গেছে তৃণমূল সরকারকে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে উৎখাত করার জন্য। আর যদিও কথাগুলো তো ভুল নয়। এই কারণে ডিএ মামলা থেকে শুরু করে সরকারি চাকরিতে দুর্নীতিগতভাবে নিয়োগ সব ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রীকে পড়তে হয়েছে জনগণের রোষের আগুনে। তাই রাজ্যের জোড়া ফুল সরকারের প্রতি রাজ্যের মানুষদের যে ক্ষোভ তাকে শান্ত করতে মুখমন্ত্রীর এইরূপ পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত। তাহলে চলুন আর অযথা কথা না বাড়িয়ে যেখানে যাক এই প্রকল্পের প্রধান প্রধান দিকগুলি।

       মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় চালু করা এই ‘দিদির সুরক্ষা কবজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী যে সকল দিকগুলিকে উন্মোচন করতে চলেছেন সেগুলি হল –

প্রথমত, 

এখানে প্রথমেই গুরুত্ব পেয়েছে মানুষের সামাজিক সুরক্ষা। বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রকে এই পর্যায়ের মধ্যে রাখা হয়েছে যেমন লক্ষীর ভান্ডার, কৃষক বন্ধু, রূপশ্রী ইত্যাদি।

দ্বিতীয়ত,

দ্বিতীয় পর্যায়ে এখানে স্থান দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মানুষের রোজগার পরিকল্পনাকে। রোজগার সংক্রান্ত যে সমস্ত প্রকল্পগুলি এখনো অবধি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছে যেমন যুবশ্রী, ১০০ দিনের কাজ ইত্যাদি গুলিকে এখানে রাখা হয়েছে।

তৃতীয়ত,

এখানে তৃতীয় পর্যায়ে স্থান দেওয়া হয়েছে শিক্ষাকে। রাজ্যের বিভিন্ন পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীর কল্যাণের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী এখন অব্দি অনেকগুলি প্রকল্প চালু করেছেন যেমন কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, শিক্ষাশ্রী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি। এ সকল প্রকল্পগুলিকে সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের অন্তর্গত করা হয়েছে।

চতুর্থত,

আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অন্যান্য সকল বিষয়ের পাশাপাশি রাজ্যের মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দিক নিয়েও যথেষ্ট চিন্তিত। আর এর জন্য তিনি স্বাস্থ্য সাথী ও অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রকল্প চালু করেছেন। এই সকল প্রকল্পের সঠিক সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কাজ রাখা হয়েছে চতুর্থ পর্যায়ে।

পঞ্চমত,

আমাদের রাজ্যে এখনো এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের মাথার উপর ছাদ নেই বা থাকার জায়গা নেই। সেই সকল মানুষদের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলা আবাস যোজনার সূচনা। পঞ্চম পর্যায়ে এই বাংলার যোজনা প্রকল্পকেই স্থান দেওয়া হয়েছে।

ষষ্ঠত,

ষষ্ঠ ক্ষেত্রে রয়েছে জয় বাংলা প্রকল্প। এবং জয় বাংলার অধীনে স্থান দেওয়া হয়েছে জয় জোহার ও তপশিলি বন্ধু প্রকল্পকে।

       সরকারের সূত্রে খবর পাওয়া গেছে যে এই সকল বিষয়গুলির যথাযথ সুবিধা প্রদানের জন্য দ্রুত কাজ চলছে রাজ্য সরকারের অধীনে। পরিস্থিতি যদি সব দিকে অনুকূল থাকে তাহলে আগামী ১১ জানুয়ারির পর থেকেই রাজ্যবাসীর প্রতিটি বিষয়ে স্বার্থ পূরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নিয়োগ করা এই সকল কর্মীরা পৌঁছে যাবেন মানুষের দরজায় দরজায়। আর তাদেরকে ন্যায্য সুবিধা পাইয়ে দেওয়াটাই হল মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান লক্ষ্য। যাতে তারা এরপর সরকারের বিষয়ে আর কোনো রকম অভিযোগ না আনতে পারে। 


আরও খবর পড়ুন: CLICK HERE

Join Telegram Channel : CLICK HERE

Leave a comment