কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন প্রকল্পে আবেদন করলেই পাবেন প্রতি মাসে 3000 টাকা করে পেনশন | Govt pension scheme 2023

 

আমাদের দেশের জনগণের কল্যাণের প্রতি দেশের সরকার অত্যন্ত তৎপর। জনগণের ভালো-মন্দ সুখ-দুঃখ ইত্যাদি নিয়ে তাদের মাথাব্যথার কারণে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জনমুখী প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী সুকন্যা সমৃদ্ধি, জন ধন যোজনা, কৌশল বিকাশ যোজনা, কৃষক বন্ধু যোজনা ও আরো অনেক। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রথম প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকেই দেশের মানুষের হিতের স্বার্থে তিনি একের পর এক কর্মসূচি পালন করতেই থাকেন। আর আজও তিনি সেই একই কর্মে মগ্ন আছেন। তার দেশের মানুষের সুবিধা অসুবিধাই তার কাছে প্রধান ব্যাপার। আর এরই প্রমাণ দিতে নতুন বছরের শুরুতেই তিনি আরও একটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছেন যার মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি মানুষ আবারও উপকৃত হতে চলেছেন। নিচে এ প্রকল্প সম্পর্কে সবকিছু নিয়ে আলোচনা করা হলো।

        বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে ভারত একটি অন্যতম দেশ। যেহেতু এটি উন্নয়নশীল তাই এদেশের মাপকাঠি সবদিক থেকে বিচার করলে উন্নত দেশগুলির তুলনায় অনেকটাই দুর্বল। তার ওপর ক্রমাগত অতিমারি ঢেউ এর কারণে দেশে অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব, সামাজিক ক্ষতি ইত্যাদি বেড়েই চলেছে। তাই এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দেশের সরকার এখন তার নিজের দেশকে আবারো এই অবস্থার মধ্যে থেকে পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে উঠেছে। এছাড়াও ভারতবর্ষে মোট অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের প্রায় ৪৩ শতাংশই কৃষি নির্ভর অর্থনীতি। আরো ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হলো শিল্প নির্ভর অর্থনীতি। এবং বাকি যেটুকু অংশ থাকে সেটুকু অন্যান্য ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে। অর্থাৎ ভারতের অর্থনীতির মূল ভিত হল কৃষিকাজ এবং তারপরেই শিল্প। কিন্তু বলাই বাহুল্য যে এই কৃষি ও শিল্পকর্মের সঙ্গে নিযুক্ত মানুষদের পরিশ্রমের মাধ্যমে আমাদের দেশের সরকারের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যা লাভ হয় তা তো হয়। কিন্তু এই সকল খেটে খাওয়া মানুষদের ভবিষ্যৎ কিন্তু একেবারেই সুরক্ষিত নয়। একটু গভীরভাবে খতিয়ে ভাবলেই তা দেখতে পাবেন। কারণ কখনো কখনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কারণবশত কৃষি কাজে ক্ষতি হতেই পারে। অন্যদিকে আবার বেশ কিছু অনিবার্য কারণবশত বা উল্লেখ্য যে যখন করোনা পরিস্থিতি চলছিল তখন এই দেশ শিল্পকর্মের দিক দিয়ে প্রায় অচল হয়ে গিয়েছিল। তাই সেই মুহূর্তে সেই সব খেটে খাওয়া মানুষদের মাথায় হাত পড়েছিল। নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা বেশ চিন্তায় ছিলেন। যদিও অতি মারির এই ঢেউ ক্রমশ ক্ষীন হতে শুরু করলে আবারও দেশের অর্থনৈতিক হাল একটু একটু করে উন্নতির পথে এগোয়।

         তাই আমাদের দেশের এই সকল খেটে খাওয়া মানুষ যারা দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের প্রধান ভীত তৈরি করে তাদের স্বার্থের কথা ভেবেই, তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক পেনশন প্রকল্পের সূচনা করেছেন এর নাম হল অটল পেনশন যোজনা। ২০১৪ সালের প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই তিনি এই প্রকল্পের শুভারম্ভ করেছিলেন। এর মাধ্যমে এখনো অব্দি উপকৃত হয়েছে দেশের কয়েকশো কোটি মানুষ। আপনারা সকলেই এই প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আগে থেকেই ভালোভাবে অবগত রয়েছেন। এখানে মূলত ছোট খাটো ব্যবসায়ী যারা একটা বয়সের পর আর পরিশ্রম করতে অক্ষম হয়ে পড়েন তাদের সেই বৃদ্ধ বয়সে কিছুটা বল যোগানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের সূচনা। সেইসব ব্যবসায়ীরা তাদের ষাট বছর অতিক্রম করার পর সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক মাসে ৩০০০ টাকা করে একটি পেনশন পেয়ে থাকেন। যেটি তাদেরকে আর্থিকভাবে অনেক অংশে সহায়তা করে বলে জানা গেছে।

প্রকল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত:- 

তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই অটল পেনশন যোজনার আওতায় থেকে সুবিধ লাভ করতে গেলে ইচ্ছুক ব্যাক্তিদের বেশ কয়েকটি শর্ত পালন করতে হবে। তবেই তারা এখানে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এই শর্তগুলি হল,

১. ইচ্ছুক ব্যক্তিকে অবশ্যই ভারতের একজন নাগরিক হতে হবে।

২. যে ব্যক্তি এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধা পেতে চান তাকে অবশ্যই তার ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে কোন ছোটখাটো ব্যবসা বা শিল্পের সঙ্গে নিযুক্ত থাকতে হবে। তবেই তিনি নিজের ষাট বছর অতিক্রম করার পর এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

৩. এক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়ার জন্য ব্যক্তিকে অবশ্যই এল আই সি বা লাইফ ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন মারফত এককালীন একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে যেমন – কোন ব্যক্তি যদি ৮ লক্ষ টাকা এই জীবন বীমা নিগমে বিনিয়োগ করে থাকেন তাহলে তিনি ষাট বছর পেরোলে প্রতিমাসে ৫০০০ টাকা করে পেনশন পাবেন। কোন ব্যক্তি যদি ৯ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন তাহলে তিনি প্রতি মাসে ৬০০০ টাকা করে পেনশন পাবেন। আর কোন ব্যক্তি যদি ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেন তাহলে তিনি ষাট বছর অতিক্রান্ত হলে প্রত্যেক মাসে ১০০০০ টাকা করে পেনশন পেতে পারেন।

৪. প্রার্থীর অবশ্যই নিজস্ব একটি সক্রিয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে এক্ষেত্রে অর্থ পাওয়ার জন্য। 

       

        তবে এক্ষেত্রে লাইফ ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন বা জীবন বিমা নিগম দ্বারা প্রার্থী যে অর্থ এককালীন সঞ্চিত রাখবেন সেটির সময় সীমা হল ১০ বছর। অর্থাৎ ১০ বছর পার করলে তিনি সেই টাকা প্রত্যাহারও করে নিতে পারেন। তবে এককালীন তাকে অবশ্যই সেই টাকা জমা রাখতে হবে এই প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য। এই অটল পেনশন যোজনার মাধ্যমে যে অর্থ আবেদনকারী প্রার্থীদের ৬০ বছর শেষে দেওয়া হবে তা প্রদান করবে উপরোক্ত এই এল আই সি সংস্থাই। 

আবেদন পদ্ধতি:-   

এক্ষেত্রে আবেদন করার জন্য বিশেষ কোনো পদ্ধতি প্রার্থীদের অবলম্বন করতে হবে না। শুধুমাত্র আপনার নিকটবর্তী যে এল আই সি সংস্থা আছে এখানে গিয়ে যোগাযোগ করুন এবং বলুন যে আপনি প্রকল্পের আওতায় সুবিধা নিতে চান তারপর তারা আপনাকে দিয়ে কিছু নির্দিষ্ট ফর্ম ফিলাপ করাবে। এই ফর্ম ফিলাপ শেষ হলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ (যেমনটা উপরে উল্লেখ করা আছে) বিনিয়োগ করে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে হবে।

             তাই দেশের সকল মানুষেরা যারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিভিন্ন ব্যবসা বা শিল্পের সঙ্গে নিযুক্ত আছেন তাদেরকে এ কথা অনুরোধ করা হচ্ছে যে তারা যদি নিজেদের বৃদ্ধ বয়সের পর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রেখে জীবন যাপন করতে চান তাহলে আর অযথা বিলম্ব না করে শীঘ্রই এর সুবিধা নিন। এর জন্য আপনার নিকটবর্তী এল আই সি অফিসে যান এবং সেখানে গিয়ে যোগাযোগ করুন। তারপর নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে অর্থ বিনিয়োগ শুরু করে প্রকল্পের জন্য আবেদন সেরে ফেলুন।

আবেদনের সময়সীমা:-

কেন্দ্রীয় সরকারের এই অটল পেনশন যোজনার মাধ্যমে প্রার্থীদের সুবিধা নিতে গেলে কোন নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। কারণ এখানে কোন আবেদন শুরু অথবা শেষের তারিখ ঘোষণাই করা হয়নি। প্রার্থীরা যখন খুশি এর জন্য আবেদন করতে পারেন এবং সুবিধা নিতে পারেন।


আরও খবর পড়ুন: CLICK HERE

Join Telegram Channel : CLICK HERE

Leave a comment