প্রাথমিক শিক্ষায় বড় রদবদ! প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ তরফ থেকে বিরাট বড় উদ্যোগ, প্রাইমারি শিক্ষকদের জানতে হবে

By Target Chakri

Published on:

পশ্চিমবঙ্গ প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে নতুন একটি বিশাল বড় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আপনি যদি প্রাইমারি শিক্ষক হয়ে থাকেন বা প্রাইমারি শিক্ষকতা করতে আগ্রহী হন তাহলে অবশ্যই আপনাকে এটি জেনে নেওয়া দরকার। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নতুন ব্যবস্থা চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল।

মূল পরিবর্তনসমূহ: শিক্ষা ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেটি হল বছরের তিনটি পরীক্ষা নেওয়া হবে এবং এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করবে। এই প্রশ্নপত্র তৈরি করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান ভালোভাবে যাচাই করা যাবে সঙ্গে শিক্ষকেরা কিরকম পড়াশোনা করাচ্ছেন তার ব্যাপারেও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। যে পরিবর্তন করা হবে সেটি হল –

 

১- বছরে মোট তিনটি সামষ্টিক মূল্যায়ন (সামেটিভ অ্যাসেসমেন্ট) পরিচালিত হবে

 

২- পর্ষদ সরাসরি প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন

 

৩- শিক্ষার মান নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই মূলত পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত

 

নতুন মূল্যায়ন কাঠামো:

পরীক্ষা সময়সীমা প্রশ্ন প্রস্তুতকারী
প্রথম সামেটিভ এপ্রিল বিদ্যালয়
দ্বিতীয় সামেটিভ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ
তৃতীয় সামেটিভ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ

 

গুরুত্বপূর্ণ দিক: পশ্চিমবঙ্গ প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে এই বড় উদ্যোগ নেওয়ার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে যেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো-

 

১. মানসম্পন্ন প্রশ্ন: এতদিন পর্যন্ত স্কুল নিজেরাই প্রশ্নপত্র তৈরি করত হলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান ভালোভাবে যাচাই করা যেত না। তবে এবার থেকে পর্ষদ প্রশ্নপত্র তৈরি করবে এবং এই পর্ষদের তৈরি প্রশ্নে থাকবে:

 

1. ৬০% পাঠ্যপুস্তকভিত্তিক প্রশ্ন

2. ২০% বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন

3. ২০% প্রায়োগিক প্রশ্ন

 

২. শিক্ষকদের জন্য নির্দেশিকা: পর্ষদের তরফ থেকে শিক্ষকদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে যেগুলো পালন করে শিক্ষকেরা ভালোভাবে শিক্ষাদান করতে পারবে ছাত্র-ছাত্রীদের। এর ফলে শিক্ষার মান উন্নত হবে। এছাড়াও প্রতিটি অধ্যায়ের জন্য বরাদ্দ সময়সীমা থাকবে এর সঙ্গে বিশেষ গুরুত্বপ্রাপ্ত বিষয় চিহ্নিতকরণ করতে হবে এবং মূল্যায়ন পদ্ধতির বিস্তারিত নির্দেশিকা পালন করতে হবে।

 

৩. শিক্ষার্থীদের কি কি সুবিধা হবে: এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হলে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান উন্নত হবে এবং রাজ্যব্যাপী সমমানের মূল্যায়ন হবে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত দক্ষতা যাচাই হবে এবং শিক্ষকদের উপর কিছুটা চাপ কমবে।

 

রাজ্যব্যাপী প্রতিক্রিয়া: এই শিক্ষাব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে বিজ্ঞ মহল এর সাধুবাদ জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি শিক্ষাবিদ ড. অরুণাংশু বসু বলেন, “এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এতে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন সম্ভব হবে।”

 

পরবর্তী পদক্ষেপ: যেহেতু চলতি বছরের কিছুটা সময় অতিবাহিত হয়েছে তাই এ বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত হবে দ্বিতীয় সামেটিভের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডর আর প্রশ্ন প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে পর্ষদ এর পাশাপাশি জানানো হয়েছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্ন বিতরণ করা হবে।

 

শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ পরামর্শ: নতুন শিক্ষাব্যবস্থা অনুযায়ী জানানো হয়েছে পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞান বাড়ানো দরকার এবং বিশ্লেষণী ক্ষমতা উন্নয়নে মনোযোগ দিতে হবে এবং নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে।

 

এই পরিবর্তন প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নতুন পদ্ধতি চালু হবে। এ ব্যাপারে আপনার কি মতামত বিস্তারিত কমেন্টে জানাতে পারেন।

Leave a Comment