পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া অথচ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিয়ে আসা হলো “নবান্ন স্কলারশিপ ২০২৫”। মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করলেই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যাবে। আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে যেন কোনো শিক্ষার্থী পড়াশোনা ছেড়ে না দেয়—এই উদ্দেশ্যেই এই প্রকল্পের সূচনা।

IMG 20250602 203021

নবান্ন স্কলারশিপ ২০২৫ কী?

নবান্ন স্কলারশিপ হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের Chief Minister’s Relief Fund থেকে পরিচালিত একটি আর্থিক সহায়তা প্রকল্প, যেখানে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা বছরে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত অর্থ সহায়তা পেয়ে থাকে। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, গ্র্যাজুয়েশন ও পেশাগত শিক্ষায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করা হয়।

কে কে আবেদন করতে পারবেন?

  • যারা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন
  • পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা
  • বোর্ড পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০% নম্বর পেয়েছেন
  • যাদের বার্ষিক পারিবারিক আয় ১.৬ লক্ষ টাকার কম

স্কলারশিপের পরিমাণ কত?

শিক্ষার স্তরবার্ষিক স্কলারশিপের পরিমাণ
মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সাধারণ গ্র্যাজুয়েশন₹10,000
ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, নার্সিং, ফার্মেসি, আইন ইত্যাদি পেশাগত কোর্স₹12,000

আবেদন প্রক্রিয়া: অনলাইন ও অফলাইন দুই পথেই সম্ভব

১. অনলাইন আবেদন:

ছাত্রছাত্রীরা cmrf.wb.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্র পূরণ করে স্ক্যান করা ডকুমেন্টসহ জমা দিতে হবে।

২. অফলাইন আবেদন:

চাইলে অফলাইনে আবেদনপত্র ডাউনলোড করে নবান্ন ভবনে গিয়ে সরাসরি জমা দেওয়া যাবে। আবেদনপত্রে সঠিক তথ্য সহ সই করে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করতে হবে।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র:

  • আবেদনকারীর আধার কার্ড
  • পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র
  • জন্ম সার্টিফিকেট
  • সাম্প্রতিক পরীক্ষার মার্কশিট (মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক)
  • বয়সের প্রমাণ
  • রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি

কেন এই স্কলারশিপ গুরুত্বপূর্ণ?

পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চল বা পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলির বহু ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। নবান্ন স্কলারশিপ সেইসব মেধাবীদের স্বপ্নপূরণের একটি হাতিয়ার। এটি শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা নয়, বরং শিক্ষার পথে এগিয়ে যাওয়ার সাহস ও শক্তি যোগায়।

আবেদন করার শেষ তারিখ

আপাতত সরকার নির্দিষ্টভাবে কোনো শেষ তারিখ জানায়নি, তবে পাসের তারিখ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরাসরি লিংক:

সচরাচর জিজ্ঞাস্য (FAQ)

১. আমি যদি ICSE বা CBSE বোর্ডের ছাত্র হই, তবুও কি আবেদন করতে পারি?

হ্যাঁ, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হলে আপনি যেকোনো বোর্ড থেকে পাস করলেও আবেদন করতে পারবেন।

২. আবেদন করতে কি অফলাইন ফর্মেও সই লাগবে?

অবশ্যই, অফলাইন আবেদনপত্রে সঠিক তথ্য সহ আবেদনকারীর সই থাকা বাধ্যতামূলক।

৩. আবেদন অনুমোদনের সময় কতদিন লাগে?

সাধারণত ৬০ দিনের মধ্যে আবেদন যাচাই ও মঞ্জুরি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

৪. আবেদন করার পরে কিভাবে আমি জানবো আমার স্কলারশিপ অনুমোদিত হয়েছে কিনা?

অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে লগইন করে আবেদন স্ট্যাটাস চেক করা যাবে অথবা SMS এর মাধ্যমে আপডেট পাওয়া যায়।

শেষ কথা

নবান্ন স্কলারশিপ ২০২৫ হলো শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত গড়ার এক উজ্জ্বল পথ। যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যোগ্য হয়ে থাকেন, তাহলে আজই আবেদন করুন এবং এই সরকারি সুযোগকে কাজে লাগান। শিক্ষা যেন কোনোভাবেই থেমে না যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *