Tata Motors অবশেষে তাদের বহু প্রতীক্ষিত ইলেকট্রিক SUV Tata Harrier EV ভারতে লঞ্চ করল। এই গাড়িটি টাটার প্রথম AWD (All Wheel Drive) প্রযুক্তিযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়ি, যা ভারতের প্রিমিয়াম EV বাজারে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। Harrier EV-এর প্রারম্ভিক এক্স-শোরুম মূল্য ধরা হয়েছে ₹২১.৪৯ লক্ষ টাকা।
চলুন দেখে নেওয়া যাক এই গাড়ির সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ফিচার, ভ্যারিয়েন্ট, ডিজাইন, স্পেসিফিকেশন এবং বুকিং সংক্রান্ত বিস্তারিত আপডেট।
Tata Harrier EV-এর প্রধান ফিচার
- টাটার প্রথম AWD (অল হুইল ড্রাইভ) বৈদ্যুতিক SUV
- দুটি ব্যাটারি বিকল্প – ৬৫ কিলোওয়াট আওয়ার এবং ৭৫ কিলোওয়াট আওয়ার
- সম্পূর্ণ নতুন acti.ev Plus আর্কিটেকচারের উপর নির্মিত
- ১৪.৫ ইঞ্চির QLED টাচস্ক্রিন, ডিজিটাল ক্লাস্টার
- বুকিং শুরু: ২ জুলাই ২০২৫
- প্রতিদ্বন্দ্বী: Mahindra XUV.e9, BYD Atto 3, Hyundai Ioniq 5
ভ্যারিয়েন্ট ও রঙের অপশন
Harrier EV তিনটি ট্রিমে লভ্য:
- Adventure
- Fearless
- Empowered
রঙের অপশন:
- Empowered Oxide
- Nainital Nocturnal
- Pure Grey
- Pristine White
এছাড়াও একটি বিশেষ Stealth Edition (কালো রঙে) পাওয়া যাবে।
ডিজাইন: ফিউচারিস্টিক কিন্তু পরিচিত
গাড়ির গঠন মূল Harrier-এর মতই রাখা হয়েছে, তবে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য কিছু নতুনত্ব আনা হয়েছে:
- সম্পূর্ণ বন্ধ গ্রিল – এরোডাইনামিক পারফরম্যান্স উন্নত করতে
- নতুন স্টাইলের ফ্রন্ট বাম্পার ও সিলভার স্ল্যাট
- LED DRL কানেক্টেড স্ট্রিপ
- ১৮ ইঞ্চির অ্যারো-স্টাইল অ্যালয় হুইল
- পিছনের ডিজাইন কিছুটা আপডেটেড
তবে, পূর্বের মতো ফ্লাশ-ডোর হ্যান্ডেল এখানে অনুপস্থিত।
ইন্টেরিয়র ও কেবিন ফিচার
Harrier EV-এর কেবিনেও বিলাসিতার ছোঁয়া রয়েছে। উল্লেখযোগ্য ফিচার:
- ১৪.৫ ইঞ্চির স্যামসাং Neo QLED টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট
- ১০.২৫ ইঞ্চির সম্পূর্ণ ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার
- ওয়্যারলেস অ্যান্ড্রয়েড অটো ও অ্যাপল কারপ্লে
- নতুন রোটারি ড্রাইভ মোড ডায়াল
Terrain Mode (ড্রাইভ মোড):
- Normal
- Sand
- Mud & Ruts
- Snow/Grass
- Rock Crawl
- Custom
প্রতিটি ট্রিম অনুযায়ী কেবিনের ফিনিশ আলাদা।
স্পেসিফিকেশন ও প্ল্যাটফর্ম
Harrier EV তৈরি হয়েছে নতুন acti.ev plus আর্কিটেকচারের উপর। এটিই প্রথম টাটা ইভি যাতে AWD ক্ষমতা রয়েছে।
ব্যাটারি ও পারফরম্যান্স
স্পেসিফিকেশন | নিম্নতর ট্রিম | উচ্চতর ট্রিম |
---|---|---|
ব্যাটারি | ৬৫ কিলোওয়াট আওয়ার | ৭৫ কিলোওয়াট আওয়ার |
ড্রাইভ টাইপ | RWD | RWD / QWD (AWD) |
পাওয়ার আউটপুট | প্রকাশিত হয়নি | ৩৯১ বিএইচপি |
টর্ক | প্রকাশিত হয়নি | ৫০৪ এনএম |
MIDC রেঞ্জ | প্রকাশিত হয়নি | ৬২৭ কিমি |
বাস্তব রেঞ্জ | ~৪৫০ কিমি | ৪৮০–৫০৫ কিমি |
এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, Harrier EV ভারতের অন্যতম শক্তিশালী ও দূরপাল্লার ইলেকট্রিক SUV।
নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি
যদিও সম্পূর্ণ নিরাপত্তা তালিকা প্রকাশিত হয়নি, তবে প্রত্যাশিত ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- ✅ ৬+ এয়ারব্যাগ
- ✅ ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা
- ✅ ADAS (Advanced Driver Assistance System)
- ✅ ইলেকট্রনিক স্টেবিলিটি কন্ট্রোল
- ✅ অল-টেরেইন মোড সাপোর্ট
Tata তাদের EV গাড়িতে ব্যাটারি সেফটির দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
লঞ্চ ও বুকিং আপডেট
- বুকিং শুরু: ২ জুলাই ২০২৫
- ডেলিভারি শুরু: আগস্ট ২০২৫ থেকে
- উপলব্ধতা: দেশের সমস্ত টাটা ইলেকট্রিক ডিলারশিপে
প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তুলনা
মডেল | ব্যাটারি | রেঞ্জ | AWD | দাম |
---|---|---|---|---|
Tata Harrier EV | ৭৫ কিলোওয়াট | ৬২৭ কিমি (MIDC) | ✅ | ₹২১.৪৯ লক্ষ |
Mahindra XUV.e9 | প্রকাশ হয়নি | প্রকাশ হয়নি | ✅ | ₹২৫ লক্ষ (প্রত্যাশিত) |
Hyundai Ioniq 5 | ৭২.৬ কিলোওয়াট | ৬৩১ কিমি (ARAI) | ❌ | ₹৪৬.০৫ লক্ষ |
BYD Atto 3 | ৬০.৪৮ কিলোওয়াট | ৫২১ কিমি (ARAI) | ❌ | ₹৩৩.৯৯ লক্ষ |
Harrier EV অফার করছে শক্তিশালী পারফরম্যান্স এবং দাম অনুযায়ী অত্যন্ত মূল্যবান ফিচার।
Tata Harrier EV-এর বিশেষত্ব
- ✅ AWD ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ভারতীয় ইলেকট্রিক SUV
- ✅ সর্বোচ্চ রেঞ্জ টাটার EV গাড়িগুলোর মধ্যে
- ✅ কাস্টম টেরেইন মোড ও উন্নত QLED ডিসপ্লে
- ✅ টেক-রিচ এবং অ্যাডভেঞ্চার-রেডি ডিজাইন
- ✅ ভারতীয় রাস্তায় সেরা পারফরম্যান্সের জন্য তৈরি
Tata Harrier EV – প্রশ্নোত্তর
১. Harrier EV-এর দাম কত?
এর এক্স-শোরুম প্রারম্ভিক মূল্য ₹২১.৪৯ লক্ষ থেকে শুরু।
২. এই গাড়িতে AWD আছে কি?
হ্যাঁ, এটি Tata Motors-এর প্রথম ইলেকট্রিক SUV যাতে AWD প্রযুক্তি রয়েছে।
৩. ব্যাটারি কনফিগারেশন কী?
Harrier EV-তে দুটি ব্যাটারি অপশন – ৬৫ kWh ও ৭৫ kWh।
৪. রেঞ্জ কত?
৭৫ kWh ট্রিমের MIDC রেঞ্জ ৬২৭ কিমি এবং বাস্তব রেঞ্জ ৪৮০-৫০৫ কিমি।
৫. কবে থেকে বুকিং শুরু হবে?
বুকিং শুরু হবে ২ জুলাই ২০২৫ থেকে।
৬. প্রধান প্রতিযোগী কারা?
Mahindra XUV.e9, Hyundai Ioniq 5 এবং BYD Atto 3।
উপসংহার
Tata Harrier EV AWD নিঃসন্দেহে ভারতীয় ইলেকট্রিক গাড়ির জগতে একটি যুগান্তকারী সংযোজন। এর আধুনিক প্রযুক্তি, শক্তিশালী ডুয়াল মোটর সাপোর্ট, প্রিমিয়াম ফিচার এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্য টাটাকে EV দুনিয়ায় আরও একধাপ এগিয়ে রাখবে।
এখন দেখার বিষয়, বাস্তব রাস্তায় গাড়িটির পারফরম্যান্স কেমন হয় এবং কাস্টমার রেসপন্স কতটা ইতিবাচক হয়।