SSC Supreme Court: গ্রুপ সি ও ডি শিক্ষাকর্মীদের জন্য আইনি সুরক্ষা? বৈঠকে বড় আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীর

সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে স্কুলে শিক্ষকদের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার নির্দেশ দিলেও যারা গ্রুপ সি গ্রুপ ডি কর্মী ছিলেন তাদের ক্ষেত্রে স্কুলে যাওয়া একেবারেই বন্ধ। অবশেষে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা কর্মীদের দাবি মেটাতে এবং তাদের আশ্বাস দেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী দেখা করেন এবং শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হলেন গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি শ্রেণির বহু কর্মী। দীর্ঘক্ষণ ধরে বৈঠক চলে এবং বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় কলকাতার তৃণমূল ভবনে, তা চলে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। বৈঠকের শেষে গ্রুপ সি গ্রুপ ডি কর্মীদের আশ্বাস দেওয়া হয় শিক্ষামন্ত্রীর তরফ থেকে এবং বলা হয়  শিক্ষকদের মতোই ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আইনি সুরক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা শিক্ষাকর্মী সুজয় সর্দার জানান, “শিক্ষামন্ত্রীর তরফ থেকে আমাদের পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে, ঠিক যেভাবে শিক্ষকদের জন্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে, ঠিক তেমনই আমাদের ক্ষেত্রেও সেই সুবিধা মিলবে। দু-একদিনের মধ্যেই আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে এমনটা আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এর জন্য সরকারের তরফ থেকে আবেদন জানানো হবে বলা হয়েছে।” তবে গ্রুপ সি গ্রুপ ডি কর্মীদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

শুক্রবার দুপুরে পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে একটি বিশাল মিছিল করে শিক্ষাকর্মীরা তৃণমূল ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাইপাসের কাছে সমস্ত শিক্ষা কর্মীদের আটকে দেন অবশেষে তাঁদের সাতজন প্রতিনিধিকে পাঠানো হয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য। বৈঠকের আগে এবং পরে তাঁদের বক্তব্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের অভিযোগ, “সরকার এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একত্রিতভাবে শিক্ষকদের চাকরি বাঁচানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে কিন্তু শিক্ষা কর্মীদের জন্য কোন আবেদন করা হয়নি। এর ফলে বৈধ শিক্ষকরা কাজে ফিরতে পারলেও আমরা যারা বৈধ শিক্ষা কর্মী রয়েছে তাদের এখনো স্কুলে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি।”

এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের জানান, “আমরা আগেই জানিয়েছি যে, যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা ২১ এপ্রিলের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। সেই কাজ আমরা করছি। শিক্ষাকর্মীরা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, তাঁদের কথা শুনেছি। তবে এর থেকে বেশি কিছু বলা যাবে না, কারণ সেটা আদালতের অবমাননার সামিল হতে পারে।”

শিক্ষাকর্মীদের দাবি, সরকার যদি শিক্ষা কর্মীদের স্বার্থে বড়সড়ো কোন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে সমস্ত শিক্ষা কর্মীরা একত্রিত হয়ে বড় ধরনের আন্দোলনের শামিল হবে। তাঁদের কথায়, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যেভাবে শিক্ষকদের জন্য আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে, শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রেও তেমন উদ্যোগ জরুরি।

বর্তমানে, রাজ্যজুড়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, যেখানে শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষাকর্মীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নচিহ্নের মুখে। তবে এই পরিপেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছে শিক্ষক না থাকলে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে কিন্তু শিক্ষা কর্মীর অভাবে স্কুল অচল থাকবে না। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাস কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে রাজ্যের হাজার হাজার কর্মীকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *