পশ্চিমবঙ্গে চালু লক্ষী ভান্ডারের থেকেও বড় প্রকল্প, প্রতিমাসে মহিলারা পাবেন ৬০০০ টাকা করে | WB Govt New Scheme

রাজ্যের সকল মহিলাদের স্বপ্ন এবার সত্যি হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের চেয়েও এক বিরাট প্রকল্পের ঘোষণা করলেন রাজ্যজুড়ে। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের সকল মহিলারা আবেদনের যোগ্য। পড়ুয়া থেকে বিবাহিত, অবিবাহিত থেকে বিধবা সকলে এখানে নিঃসংকোচে আবেদন করতে পারবেন এবং আবেদন করলেই পেয়ে যাবেন প্রতি মাসে ভালো টাকা। এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের সকল মহিলারা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় চালু হওয়া লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের অনেক মা-বোনেরাই প্রচন্ডভাবে উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু আজ মুখ্যমন্ত্রী নতুন যে প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন তাতে রাজ্যের সকল মহিলাদের মন আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠবে। আর অযথা কথা না বাড়িয়ে নীচে এই সম্পর্কে বিশদে সব জেনে নেওয়া যাক।

        মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক জনমুখী প্রকল্প চালু করে চলেছেন। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে তিনি একটু বেশি সহৃদয় এবং এর পরিচয় মিলে মহিলাদের জন্য তার পক্ষ থেকে চালু করা একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল কন্যাশ্রী,  রূপশ্রী, লক্ষীর ভান্ডার সহ আরো অনেক প্রকল্প। এই সকল প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের রাজ্যের বহু মহিলা, তারা পড়ুয়া হোক বা বিবাহিত সকলেই নানা রকম সুবিধা লাভ করে থাকেন।

       ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই সকল প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের ঘোষণা ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে যদি তৃতীয়বারের জন্য তিনি রাজ্যে ক্ষমতায় আসেন তাহলে রাজ্যের সকল উপযুক্ত মহিলাদের তিনি প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে ভাতা দেবেন। তারপর সেই নির্বাচনে জয় লাভ করার পর তিনি নিজের প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পূরণও করেছেন। বর্তমানে আমাদের রাজ্যের কোটি কোটি মহিলা এ লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের অধীনে উপকার পেয়ে থাকেন। প্রতিমাসে ঘরে বসেই তারা সরকারের পক্ষ থেকে একটা ভালো টাকা রোজগার করতে পারেন। এই প্রকল্পের আওতায় থাকা সাধারণ শ্রেণীর মহিলাদের ৫০০ টাকা এবং সংরক্ষিত শ্রেণীর মহিলাদের ১০০০ টাকা করে দেওয়া হয়ে থাকে। 

       কিন্তু এবারে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এমন এক প্রকল্পের খবর পাওয়া গেছে মা শুনে রাজ্যের সকল মহিলারা চমকে উঠবেন। বর্তমানে এই দুর্মূল্যের বাজারে আমাদের দেশ তথা রাজ্যের অনেক সংখ্যক মানুষই অত্যন্ত কষ্টে জীবন যাপন করে। কারণ তাদের রোজগারের সামান্য টাকায় সংসার চালানো কোনমতেই সম্ভব হয়ে ওঠেনা। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা উপরোক্ত লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের মহিলারা কিছুটা হলেও উপকৃত হয়ে থাকেন। কিন্তু তাতেও তাদের কষ্ট সম্পূর্ণ লাঘব করা সম্ভব হয়নি। রাজ্যের এই সকল মহিলাদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্পের সূচনা। এখানে প্রতি মাসেই মহিলারা ঘরে বসে পেয়ে যাবেন ৬০০০ টাকা, শুধুমাত্র আবেদন করার অপেক্ষা। 

       এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের যে সকল মহিলা আবেদন করবেন তাদেরকে প্রথমে একটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরবর্তীকালে তারা বিভিন্ন রকম কাজ শিখে বাড়িতে বসেই মোটা টাকা রোজগারের সুযোগ পাবেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথা সেটি হল এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের সকল মহিলাদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর জন্য কোন রকম টাকা লাগবে না। তাহলে চলুন আর সময় না নষ্ট করে এখানে আবেদন এবং অন্যান্য বিশেষ সম্পর্কে সব সবিস্তারে জেনে নিই।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:-

এই প্রকল্পে আবেদনের জন্য রাজ্যের মহিলাদের বিশেষ কয়েকটি যোগ্যতার বিষয়ে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যেমন

১. আবেদনকারী প্রার্থীদের অবশ্যই এই রাজ্যের অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

২. এক্ষেত্রে প্রার্থীদের কোন রূপ শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি দেওয়া হয়নি। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সকলেই এখানে আবেদনের যোগ্য।

৩. এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রার্থীদের আয় নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে কম হতে হবে। অর্থাৎ শুধুমাত্র দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী প্রার্থীরাই এখানে আবেদনের যোগ্য।

আবেদনের জন্য কি কি নথিপত্র প্রয়োজনীয় ?

এখানে আবেদন করার জন্য রাজ্যের মহিলাদের যে সকল নথিপত্র গুলিকে দরকারী ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলি হল 

১. আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড।

২. প্রার্থীরা যে পঞ্চায়েত অধীনস্থ এলাকায় বসবাস করেন সেই পঞ্চায়েতের একটি স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট।

৩. ইনকাম সার্টিফিকেট।

৪. এক কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

৫. জাতি গত শংসাপত্র (যদি থাকে)।

আবেদন পদ্ধতি:-

এখানে আবেদন করতে হলে রাজ্যের মহিলা প্রার্থীদের তাদের নিজস্ব এলাকার পঞ্চায়েতের কাছে গিয়ে আবেদন জানাতে হবে। উপরোক্ত সকল প্রকার যোগ্যতার অধিকারী প্রার্থীরা উল্লেখিত নথিপত্র গুলি সঙ্গে নিয়ে চলে যান নিজস্ব এলাকার পঞ্চায়েত অফিসে। তারপর সেখানে গিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে সমস্ত নথিপত্র জমা দিয়ে এবং আবেদন পত্র পূরণ করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করুন।

আবেদন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা:-

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উপরোক্ত এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কোনরুপ নির্দিষ্ট সময়সীমা এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে রাজ্যের সকল মহিলাদের অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যদি এখানে আবেদন করার জন্য উপযুক্ত হন, সেক্ষেত্রে আর দেরি না করে শীঘ্রই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করে দিন। কারণ এইরকম সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করার কোনো মানেই হয় না। 


আরও খবর পড়ুন: CLICK HERE

Join Telegram Channel : CLICK HERE

Leave a comment